 
     
 যশোর প্রতিনিধি :
মানবিকতার সীমাহীন এক দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে যশোর সদর উপজেলার ইছালী গ্রামের হতভাগা এক মা-ছেলের জীবন। ঋণের দায়ে বাড়িঘর হারিয়ে তারা এখন আশ্রয় নিয়েছেন একটি গোয়াল ঘরে। ঝড়-বৃষ্টি, শীত-গরম—সব প্রতিকূলতা সঙ্গী করে চলছে তাদের টিকে থাকার লড়াই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের নাহিদ হোসেন নামে এক যুবক ২০২৩ সালে স্থানীয় আব্দুল মাজেদ নামে এক মহাজনের কাছ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। কিন্তু প্রকৃতিক দুর্যোগ ও টানা বৃষ্টিতে পুকুরের সমস্ত মাছ ভেসে যায়। এতে নাহিদ ব্যবসায়িকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েন।
এরপর মা অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার খরচ জোগাতে আরও ৫ লাখ টাকা ঋণ নেন নাহিদের পরিবার। ঋণ নেয়ার সময় প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা সুদ দেয়ার শর্ত ছিল। কিন্তু ব্যবসায় লোকসান ও অসুস্থতার কারণে তারা সেই সুদের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি।
সম্প্রতি মা ও বাবা দুজনেই অসুস্থ হয়ে পড়লে নাহিদ বাধ্য হয়ে আরও ৪ লাখ টাকা জমি বন্ধক রেখে ঋণ নেন। ফলে ক্রমে ঋণের বোঝা বেড়ে গেলে একপর্যায়ে বসতভিটা বিক্রি করে দেন তারা। এখন মা-ছেলেসহ পরিবারটি আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশীর দয়া করে একটি জরাজীর্ণ গোয়াল ঘরে।
সেখানে একটি পুরনো খাট, কিছু বালতি ও ছেঁড়া কাপড়ই তাদের একমাত্র সম্পদ। অসুস্থ মা বিছানায় পড়ে আছেন, আর ছেলেটি প্রতিদিন কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এছাড়াও নাহিদ বিভিন্ন সময় গ্রামের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কমপক্ষে ২০/২২ লাখ টাকা ধার করে বিভিন্ন ব্যাবসা করতে যেয়ে ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, 'ছেলেটা খুব ভদ্র। মাকে বাঁচাতে সর্বস্ব হারিয়েছে। এখন ওদের পাশে কেউ নেই।'
এ অবস্থায় এলাকাবাসীর দাবি, সরকারি বা বেসরকারি সাহায্যের মাধ্যমে যেন এই মা-ছেলের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়। মানবিক কারণে সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন, তবে হয়তো তারা আবারও মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে পারেন।
যশোর জার্নাল
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ আসিফ আকবর সেতু।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক:বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক সোসাইটি, যশোর (সাবেক)
মোবাইলঃ +৮৮ ০৯৬৯৬০৭০৩৯১
Gmail: jashorejournal@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত