নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
যশোর শহরের বিভিন্ন সড়কে বৈদ্যুতিক পিলারজুড়ে জটিল হয়ে উঠেছে তারের জঞ্জাল। বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও ডিশ লাইনের সংযোগগুলো অপরিকল্পিতভাবে ঝুলে থাকায় বাড়ছে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি। সদ্য ঘটে যাওয়া এক অগ্নিকাণ্ডে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র সড়কে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে আগুন, যা আতঙ্ক ছড়ায় আশপাশের মার্কেট ও পথচারীদের মধ্যে। ফায়ার সার্ভিস দ্রুত এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা পায় প্রায় ২০০ দোকান।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, গত ১৫ মাসে শহরে অন্তত ৩৬টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তারের জঞ্জাল থেকেই। এই সংখ্যা শুধু তাদের রেকর্ড অনুযায়ী; বাস্তবে আরও অনেক ছোটখাটো দুর্ঘটনার তথ্য রয়েছে। ঘোপ বেলতলা ও পাইপপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার বৈদ্যুতিক খুঁটিতে আগুন লাগে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও যশোর পৌর নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু অভিযোগ করেন, কেউ তদারকি না করায় ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছেমতো তার টানছে, যার ফলে ফুটপাথ দিয়ে হাঁটার সময় মাথায় তারের স্পর্শ পাওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
প্রায় ১৫ হাজার বৈদ্যুতিক খুঁটিতে অনুমোদনহীনভাবে তার ঝুলিয়ে রেখেছে অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠান। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যেমন দড়াটানা, মাইকপট্টি, বড় বাজার, হুঁশতলা, আরএন রোডসহ বহু জায়গায় মাকড়সার জালের মতো ছড়িয়ে থাকা তারের অংশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
পৌরসভার শহর পরিকল্পনাবিদ সুলতানা সাজিয়া বলেন, এমন অব্যবস্থাপনা শহরের সৌন্দর্য ও সঞ্চালন ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলছে। মাস্টারপ্ল্যানে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল লাইন থাকলেও বাজেট না থাকায় কাজ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।
যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ জানান, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ডিশ ও ইন্টারনেট লাইনের সংযোগ রাবারজাতীয় দাহ্য উপাদান থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার আশঙ্কা তৈরি করে।
পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান এবং ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী নাসির উদ্দীন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তারা জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছাড়া কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন।