 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    
নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
যশোর শহরতলির চাঁচড়া ভাতুড়িয়া কলেজ রোডে অবস্থিত ‘আরা প্লাজা’র একটি চেম্বারে নিজেকে দাঁতের চিকিৎসক দাবি করে নিয়মিত রোগী দেখছেন প্রিতম সরকার নামের এক ব্যক্তি। চেম্বারটির নাম ‘ফ্যামিলি ওরাল অ্যান্ড কেয়ার’। বাহ্যিকভাবে সব কিছুই যেন একটি অভিজ্ঞ ডেন্টিস্টের চেম্বারের মতো—সুসজ্জিত পরিবেশ, এয়ার কন্ডিশনড রুম, ফোন রিসিভে সহকারী, সিরিয়ালের নিয়ম-কানুন—সব কিছুতেই রয়েছে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া।
কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রিতম সরকার আদতে কোনো স্বীকৃত ডেন্টিস্ট নন। তিনি একজন ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট। তবুও তার নামের আগে ‘ডেন্টিস্ট’ পদবি ব্যবহার করে সাইনবোর্ডে প্রদর্শন করছেন ‘ডিএমডিটি (ঢাকা), এফটি (সদর হাসপাতাল, খুলনা)’ জাতীয় পদবি, যা স্বীকৃত চিকিৎসা ডিগ্রি নয়।
স্বাস্থ্য বিধিমালায় স্পষ্ট বলা আছে—শুধুমাত্র এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রিধারীরাই নিজেদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ বা ‘ডেন্টিস্ট’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারেন। ডেন্টাল টেকনোলজিস্টরা মূলত চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করেন এবং সীমিত কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারেন, কিন্তু রোগী দেখা, ব্যবস্থাপত্র লেখা বা জটিল চিকিৎসা করার অধিকার তাদের নেই।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রিতম সরকার তার চেম্বারে দাঁতের বিভিন্ন চিকিৎসা দিয়ে থাকেন—দাঁত তোলা, স্কেলিং, ফিলিং, দাঁত বাঁধানো, রুট ক্যানেল এমনকি জটিল ইনফেকশনজনিত সমস্যার চিকিৎসাও তিনি করে থাকেন। এসব চিকিৎসার জন্য রোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তার দেওয়া নাম্বারে কল করলে একজন সহকারী জানায়, “ডাক্তার সাহেব ব্যস্ত আছেন, পরে ফোন করবেন।” পরবর্তীতে অন্য একটি নাম্বার থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন যে তিনি প্রকৃত ডেন্টিস্ট নন, তবে ডেন্টাল বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে দাবি করেন।
স্থানীয় অনেকেই বিষয়টিকে প্রতারণা বলে মনে করছেন। তারা বলছেন, এমন ভুয়া পরিচয়ে চিকিৎসা কার্যক্রম রোগীদের জন্য হতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ।