
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
যশোরে সাত বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীর হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে আটক মাদ্রাসা শিক্ষক আবদুস সামি (২৭) কে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছে। শহরের চোপদারপাড়া এলাকার বাসিন্দা সামি চাঁচড়া রেলগেট তেঁতুলতলা অঞ্চলের তানযীমুল উম্মাহ প্রি–হিফয মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়—দুই শিশুকে একটি কক্ষে বেঁধে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়। ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করে।
শিশু রাইয়ানের বাবা রাসেল আহমেদের তথ্য অনুযায়ী, তার ছেলে দুই বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানে হিফয বিভাগে পড়ছে। ১১ নভেম্বর সকালে ক্লাস চলাকালীন শিক্ষক আব্দুস সামি হঠাৎ শ্রেণিকক্ষে এসে রাইয়ানকে ডেকে নিয়ে যান এবং অল্পক্ষণের মধ্যেই জোরে আছাড় মারেন। এতে শিশুটির হাত ভেঙে যায়।
এরপর চিকিৎসা না করিয়ে তাকে ভবনের চতুর্থ তলার একটি কক্ষে নিয়ে হাত বেঁধে আরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুই ঘণ্টা পর অবস্থার অবনতি হলে রাইয়ানকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়—শিশুটি নাকি খেলতে গিয়ে পড়ে আহত হয়েছে। তবে রাইয়ানের বর্ণনায় প্রকৃত ঘটনার সত্যতা পরিবার জানতে পারে।
রাসেল আহমেদ আরও জানান, ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামের আচরণ হতাশাজনক হওয়ায় তাকেও মামলায় সহ–আসামি করা হয়েছে। এদিকে প্রধান শিক্ষক দাবি করেন, ঘটনাটি জানার পর শিক্ষক সামি পালিয়ে যান এবং পরপর দুই দিন অভিভাবক ও কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসলেও সমাধান হয়নি।
১৪ নভেম্বর চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়িতে এক শালিসে শিশুর পরিবার ৩২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বিনা খরচে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর প্রস্তাব দেয়, তবে রাইয়ানের পরিবার তা প্রত্যাখ্যান করে আইনি উদ্যোগ নেয়।
চাঁচড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শুভ কুমার রায় জানান, শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষক সামিকে আদালতে হাজির করা হয় এবং আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।