যশোরে দুই যুবককে মোবাইল চুরির অভিযোগে আটক, পরে সোনা চুরির মামলায় চালান
যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়নে মোবাইল চুরির অভিযোগে দুই যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে বেধড়ক মারধর ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা চাঁদা না পেয়ে ওই দুই যুবককে পুরনো একটি সোনা চুরির মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আটক যুবকরা হলেন—হৈবতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের দিনমজুর আমিন হোসেনের ছেলে ইকরাম হোসেন এবং মিরা লাউখালী গ্রামের সিরাজ ইসলামের ছেলে সাগর হোসেন। বর্তমানে তারা যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন।
ইকরামের বাবা আমিন হোসেন ও সাগরের মা রিনা বেগম জানান, হাপানিয়া গ্রামের রবিউলের একটি মোবাইল ফোন ও নগদ সাত হাজার টাকা চুরির অভিযোগে স্থানীয় কয়েকজন আকস্মিকভাবে বাড়িতে এসে ইকরাম ও সাগরকে মারধর করে তুলে নিয়ে যান। এরপর শালিসের মাধ্যমে নয় হাজার টাকা আদায় করা হয় পরিবার থেকে। কিন্তু পরবর্তীতে আরও ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করলে দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের পুলিশে দেওয়া হয়।
ফুলবাড়ি পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ তাপস কুমার আঢ্য জানান, স্থানীয়দের অভিযোগে তিনি ইকরাম ও সাগরকে পুরনো একটি সোনা চুরির মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতে পাঠান। তার দাবি, স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে আগেও অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মামলার তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি লেবুতলা ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামে এক বাড়িতে সোনা চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৭ মার্চ একটি মামলা দায়ের হয়, যার তদন্ত কর্মকর্তা তাপস কুমার নিজেই। পরে ইকরাম ও সাগরকে এই মামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক দেখানো হয়।
এদিকে অভিযুক্ত স্থানীয় এক বিএনপি নেতা সালাম বলেন, ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়নি। মোবাইল ও টাকার ক্ষতিপূরণ বাবদ নয় হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন, দুই যুবককে পুলিশে দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
চুরির শিকার মোবাইল মালিক রবিউল বলেন, তার মোবাইল ওই দুইজন চুরি করেছে বলে সন্দেহ ছিল। স্থানীয়রা টাকা আদায় করে দিয়েছেন, তাই তার আর কোনো অভিযোগ নেই। তবে কেন তাদের থানায় দেওয়া হলো, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।