 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    
নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
জুলাই মাসের গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে যশোরে পাশাপাশি স্থানে একই সময়ে সমাবেশ ও বিজয় মিছিল করেছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। শহরের দুই প্রান্তে বড় দুটি মিছিলের কারণে সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ-সংলগ্ন জিরো পয়েন্টে জামায়াত সমাবেশ করে মিছিল নিয়ে মনিহার এলাকার দিকে যায়। একই সময়ে টাউন হল মাঠে বিএনপির সমাবেশ থেকে বিজয় মিছিল পালবাড়ি মোড়ের দিকে যাত্রা করে। সকাল ১০টা থেকে শহরের দড়াটানা, চিত্রা মোড়, ঈদগাহ মোড়, চৌরাস্তা ও কোর্ট মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় যানজট দেখা দেয়।
দুটি দলের সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শহরের রাজপথ। স্থানীয়রা জানান, পাশাপাশি স্থানে দুটি বড় দলের সমাবেশ কার্যত রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের রূপ নেয়।
জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক মো. শাহাবুদ্দিন জানান, এটি আসলে শক্তির মহড়া নয়; সময়সূচির কারণে এমনটি মনে হয়েছে। তিনি দাবি করেন, তাঁদের সমাবেশে সদর, মনিরামপুর, ঝিকরগাছা ও চৌগাছা থেকে প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মী যোগ দেন।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, “৫ ও ৬ আগস্টের জন্য আমরা আগে থেকেই টাউন হল মাঠ বুকিং দিয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১২টায় আমাদের বিজয় মিছিল হয়েছে। জামায়াতকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা একই সময়ে কর্মসূচি পালন করেছে, ফলে আমাদের মিছিল পালবাড়ির দিকে সরিয়ে নিতে হয়।”
সদর উপজেলা ও শহর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাবেরুল হক, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। পরে অনিন্দ্য ইসলামের নেতৃত্বে ঈদগাহ মাঠ থেকে মিছিল বের হয়ে দড়াটানা মোড় ঘুরে পালবাড়ি ভাস্কর্য মোড়ে পথসভা করে সমাপ্ত হয়।
পথসভায় নার্গিস বেগম বলেন, “আমাদের চূড়ান্ত বিজয় এখনো বাকি। দীর্ঘ ১৬ বছর গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, বহু নেতা-কর্মী গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।”
অন্যদিকে, শহরের জিরো পয়েন্টে জেলা জামায়াতের গণসমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্টের চেতনা যারা ধারণ করে না, তাদের মধ্যে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শোনা যায়। মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে শুধু বক্তব্যে নয়, কাজে প্রমাণ রাখতে হবে।”
জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মাওলানা আজীজুর রহমান, আবু জাফর সিদ্দিকী, গোলাম কুদ্দুসসহ একাধিক নেতা। সমাবেশ শেষে বড় একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়।