
নিজেস্ব প্রতিবেদক:
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সহিংসতা দমনে যশোরে শুরু হয়েছে বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্ট ফেজ–২’। এ অভিযানের অংশ হিসেবে এক রাতেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯ জনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, জনপ্রতিনিধি ও একাধিক মামলার আসামি রয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার রাতভর যশোর ডিবি পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং একজন ইউপি সদস্য। কাজীপাড়া কাঠালতলা এলাকা থেকে জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল গাজীকে আটক করা হয়। তাকে যুবলীগের একটি বিক্ষোভ মিছিলের ব্যানার তৈরির মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া সার্কিট হাউজ এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শরীফ আব্দুল্লাহ আল মারুফ পিয়াল ও তার ভাই জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরীফ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ হিমেলকে আটক করা হয়। সদর উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রাম থেকে যুবলীগের আলী হোসেনকে আটক করে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে বোমা হামলার মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। একই মামলায় পুরাতন কসবার জিল্লু ফরাজিকে চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আটক করা হয়।
ডিবির আরেকটি অভিযানে কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্য ও একাধিক মামলার আসামি অমিত হাসানকে স্টেডিয়ামপাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। তাকে একটি চুরির মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। চৌগাছা উপজেলার সলুয়া পূর্বপাড়া থেকে ইউপি সদস্য উজ্জ্বল হোসেনকে আটক করে যশোরে বিএনপির পার্টি অফিসে অগ্নিসংযোগের মামলায় সোপর্দ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, জেলার বিভিন্ন থানা পুলিশও আলাদা অভিযানে একাধিক মামলার আসামিদের আটক করেছে। বাঘারপাড়া থানায় নাশকতার মামলায় তিনজন, শার্শা, অভয়নগর, কেশবপুর ও মণিরামপুর থানায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী এবং ইউপি সদস্যসহ মোট ১৩ জনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে নাশকতা পরিকল্পনা, ককটেল উদ্ধার ও সহিংসতার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
জেলা পুলিশ জানায়, আটক সবাইকে সংশ্লিষ্ট থানা থেকে যশোর আদালতে পাঠানো হয়েছে। শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদি ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোর কমিটির সভায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং সহিংসতা দমনে ‘ডেভিল হান্ট ফেজ–২’ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবেই যশোরে এ অভিযান শুরু হয়েছে।