জিহাদ হোসেনঃ
যশোরে ডিবি পুলিশের ছদ্মবেশে প্রতারণা ও অর্থ আদায়ের ঘটনায় জড়িত একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুন যশোরের কোতোয়ালি থানায় পারিবারিক বিরোধের অভিযোগ করতে যান ফিরোজ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগপত্রটি কম্পিউটারের দোকান থেকে টাইপ করে থানায় জমা দিতে যাওয়ার সময় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি নিজেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তা নিয়ে নেয়।
পরে ওই ব্যক্তি ফিরোজকে জানায়, তার অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে, এবং থানায় অভিযোগ জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এরপর ওই ভুয়া ডিবি সদস্য আরও একজনকে নিয়ে ফিরোজের শ্বশুরবাড়ি চুড়ামনকাটিতে গিয়ে তদন্তের নামে প্রহসন শুরু করে।
তারা শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জানায়, ফিরোজ তাদের নামে অভিযোগ করেছে এবং গ্রেফতারে বিশ হাজার টাকা দিয়েছে। একইসঙ্গে তারা প্রস্তাব দেয়, ফিরোজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে তারা ব্যবস্থা নেবে। একপর্যায়ে তারা খরচের অজুহাতে এক হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়।
ঘটনায় সন্দেহ হলে ফিরোজের শ্বশুর বিষয়টি জেলা পুলিশকে জানান। যশোরের পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা বিভাগ তদন্তে নামে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ৯ জুন রাত দেড়টার দিকে কোতোয়ালি থানার পাঁচবাড়িয়া উপশহর এলাকা থেকে মোঃ রবিউল ইসলাম রনি (৩২) নামে একজনকে গ্রেফতার করে ডিবি। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মোঃ শফিকুল ইসলাম (৩৪) নামে আরও একজনকে একই এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা ভুয়া ডিবি পরিচয়ে প্রতারণার কথা স্বীকার করে। এছাড়া আরও একটি ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া যায়।
গত ৫ জুলাই কোতোয়ালি থানার আড়পাড়া এলাকায় তারা রাস্তায় চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ পরিচয়ে যানবাহনে তল্লাশি চালায়। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রা রনি ও তার সহযোগী রায়হানকে ধরে ফেলে। তবে পুলিশের উপস্থিতির আগেই রনি পালিয়ে যায়। রায়হানকে আটক করে পুলিশ, তার কাছ থেকে একটি চাকু, একটি ইজিবাইক ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় থানায় পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন: ১. মোঃ রবিউল ইসলাম রনি (৩২), পিতা- মোঃ সুজা উদ্দিন, ঠিকানা- পাঁচবাড়িয়া, থানা- কোতোয়ালি, জেলা- যশোর।
২. মোঃ শফিকুল ইসলাম (৩৪), পিতা- মোঃ আব্দুর রব, ঠিকানা- পাঁচবাড়িয়া, থানা- কোতোয়ালি, জেলা- যশোর।