
নিজেস্ব প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশের বৃহত্তম ও ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল মণিহার সিনেমা হল এবার ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যশোর শহরে অবস্থিত এই সুপরিচিত সিনেমা হলটি ৪২ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন ধরে এটি শুধু যশোর নয়, পুরো দেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে এক অনন্য আকর্ষণ ছিল। একসময় জাপান, কোরিয়া, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া ও ইংল্যান্ড থেকেও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা এখানে সিনেমা দেখতে আসতেন।
হলের মালিক জিয়াউল ইসলাম মিঠু জানিয়েছেন, লোকসান সামলানো এখন আর সম্ভব হচ্ছে না। সিঙ্গেল স্ক্রিনে দর্শক না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই হলটি ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন,
“এখন তো ছবি নেই, ছবি না থাকলে হল কিভাবে চালাব? কলকাতার সিনেমা চালাচ্ছি, সেটাতেও দর্শক নেই। আমাদের ১ হাজার ৪৩০ আসনবিশিষ্ট এই হলে ২৫ জন কর্মচারী আছে। মাসে বিদ্যুৎ বিল আসে লাখ টাকার ওপরে। এই পরিস্থিতিতে হল চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।”
মিঠু আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী হলটি ভেঙে সেখানে মার্কেট ও আবাসিক হোটেল নির্মাণ করা হতে পারে। এরই মধ্যে স্থাপত্য নকশার কাজ শুরু হয়েছে। সব কিছু পাস হলে ভাঙার কাজ শুরু হবে। তবে মণিহার সিনেপ্লেক্স চালু থাকবে।
উল্লেখ্য, যশোরের মণিহার সিনেমা হলটি ১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হয়। স্থপতি কাজী মোহাম্মদ হানিফের নকশায় নির্মিত এই হলটি আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর কারণে প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই খ্যাতি পায়। ঢালিউডের স্বর্ণযুগে অসংখ্য জনপ্রিয় ছবির প্রদর্শনী কেন্দ্র হিসেবে মণিহার একসময় দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করে।
আজ সেই ঐতিহ্যবাহী হল ভাঙার পথে, তবে সিনেপ্লেক্স থাকায় দর্শকদের জন্য আধুনিক প্রেক্ষাগৃহের বিকল্প খোলা থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মালিক পক্ষ।