
নিজস্ব প্রতিবেদক:
যশোরের তানজিমুল উম্মাহ হিফয মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী রাইয়ানকে ঘিরে সাম্প্রতিক যে ঘটনা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, সেটিকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
ঘটনাটি ঘটে ১২ নভেম্বর সকালে। প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, হিফয বিভাগের শিক্ষক আব্দুস সামী রাইয়ানের হাত ধরে টান দিলে সে পিছলে মেঝেতে পড়ে যায় এবং হাতে সামান্য আঘাত পায়। পরে তাকে শিক্ষকদের আবাসিক কক্ষে বিশ্রাম দেওয়া হয়।
প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে রাইয়ানকে হাসপাতালে পাঠান এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চিকিৎসক প্রথমে হাতের কনুইয়ে চোটের আশঙ্কায় প্লাস্টার দিলেও পরবর্তী পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়—তার হাতে কোনো ভাঙন বা ফ্র্যাকচার হয়নি।

ঘটনাটি জানামাত্রই শিক্ষক আব্দুস সামীকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয় এবং ওই রাতেই ফাউন্ডেশনের জরুরি বৈঠকে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এদিকে, ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীর পরিবার এবং একটি তৃতীয় পক্ষ মাদ্রাসার কাছে ১ কোটি টাকা দাবি করে, যা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ‘চাঁদা দাবি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। কর্তৃপক্ষ দাবি প্রত্যাখ্যান করলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু গণমাধ্যমে ‘টর্চার সেল’সহ বিভিন্ন ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
কর্তৃপক্ষ জানায়, যে কক্ষটিকে ‘টর্চার সেল’ বলা হচ্ছে সেটি আসলে শিক্ষকদের আবাসিক রুম—যেখানে নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তার কারণে সিসি ক্যামেরা থাকে না। তবে পুরো ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরায় নজরদারির আওতায় রয়েছে।
প্রধান শিক্ষক বলেন,
“শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। দায়িত্বে থাকা একজন শিক্ষকের আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়—তাই দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছু পক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে অতিরঞ্জিত তথ্য ছড়িয়ে প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”

তিনি আরো জানান, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে কঠোর নজরদারি ও নিয়মকানুন আরও জোরদার করা হবে।
সবশেষে, সঠিক তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর অভিভাবকদের মধ্যে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল তা কেটে গেছে এবং তারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।